উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কলেজের দুর্ঘটনাস্থলের উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। আকস্মিক দুর্ঘটনায় পাইলটসহ ১৯ জন নিহত এবং অন্তত ১৬৪ জন আহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সোমবার রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে আইএসপিআর ও ফায়ার সর্ভিস। আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক।
যেভাবে দুর্ঘটনা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি সোমবার বেলা ১ টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর এ কে খন্দকার ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। এরপর এতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। (বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনা ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম জেটটিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ফাঁকা স্থানে নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত এটি দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা যা জানান
মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, জেটটি আছড়ে পড়ায় বিদ্যালয় শাখার ক্যানটিন লাগোয়া একটি শ্রেণিকক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকেও ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে ছিলেন কলেজটির নিরাপত্তাকর্মী আকবর হোসেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণির ছুটি হয়। শিক্ষার্থীরা কেবল বের হচ্ছিল। এসময় হঠাৎ বিকট শব্দের পর তিনতলা ভবনের সামনের নারিকেল গাছ ভেঙে ভবনে ধাক্কা দেয় বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। তিনতলা ভবনের নিচতলা মাটির নিচে, সেখানে ক্লাস হয় না। বিমানটি সেখানে ঢুকে পড়ে।
হাসপাতালের চিত্র
দুর্ঘটনায় দগ্ধদের নেয়া হচ্ছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত দগ্ধ ৭০ জনকে এখানে ভর্তি করা হয়। অধিকাংশেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দগ্ধ অধিকাংশের শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে। তাদের মধ্যে কলেজটির ছাত্র, ছাত্রী ও শিক্ষক আছেন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক
বিমান বিধ্বস্তে হতাহতদের সম্মানে আগামীকাল মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। পাশাপাশি সব সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশি মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।