আপলোড সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০৯:৪৭:২৬ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০৯:৪৭:২৬ অপরাহ্ন

ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪


রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কাছে প্রকাশ্যে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে বীভৎসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এর আগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় দুজন।
 
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর বীভৎস এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে এই ঘটনায় মামলা হয়। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেফতার হলো।
 
এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এজাহার নামীয় আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেপ্তার করে। এ সময় তারেক রহমান রবিনের হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
 
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামে এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর কোতয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
পরবর্তীতে পুলিশ নিহতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
 
ওই ঘটনায় নিহত ব্যবসায়ীর বড় বোন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
 
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
 
এদিকে প্রকাশ্যে এভাবে একজনকে পাথর দিয়ে থেঁতলে হত্যার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমসহ নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য সবার।
 
এদিকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানিয়েছে, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।
 
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, র‌্যাব-১০ রাজধানী থেকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
 
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চালু ছিল এবং আনসার ক্যাম্পের সদস্যরাও আশপাশে অবস্থান করছিলেন। তবে এমন ভয়াবহ সন্ত্রাসের সামনে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে সোহাগকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, তিনি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙাড়ি ও পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার দোকানের নাম ছিল ‘সোহানা মেটাল’। বিদ্যুতের তামার ও সাদা তারের ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন তিনি। এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিলেন মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু। তারা নিয়মিত চাঁদা দাবি করছিলেন এবং ব্যবসার ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিলেন। এই বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ এবং হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন ও টিটুসহ অধিকাংশ আসামি ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের সংগঠনে কোনো আনুষ্ঠানিক পদ ছিল কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি।
 
এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় নাম উল্লেখ করে ১৯ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
 
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার।
সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক তৈয়বুর রহমান, নির্বাহী সম্পাদক : আরিফ হোসেন, বার্তা সম্পাদক : মোশারফ হোসেন, উপদেষ্টা : ফাতেমা বেগম
ই-মেইল: 24sonalirajshahi@gmail.com, ওয়েবসাইট : www.sonalirajshahi.com, বার্তা বাহক নম্বর: 01715801785, 01766227626, 01784336244, 01712414708